প্রবাসে সবাই স্বইচ্ছাই আসলেও, নিজের ইচ্ছাতে কিন্তু আর দেশে ফেরা হয়না। দেশে ফিরতে গেলে সামনে এসে দাড়ায় নানা প্রতিবন্ধকতা।
পরিবার, অভাব আর ঋণের কথা ভেবে ভেবে, তার আর হয়না বাড়ি ফেরা।
আর তাই বহু স্বপ্ন, আশা আর ইচ্ছেগুলো ধিরে ধিরে নিজের অজান্তেই সমাধিত হয়ে যায়।
পরিবারের চাহিদা, একটু স্বচ্ছলতা নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে, প্রবাসীদের বাড়ি ফেরার স্বপ্নটা মাটিচাপা পরে যায়। ভাল একটা ঘর, ঘর হলে, ঘরের জন্যে ভাল ফার্নিচার। বাবা মায়ের চিকিৎসা, ছোট ভাই কিংবা সন্তানের উজ্জল ভবিষ্যত গড়তে গিয়ে, প্রবাসের মাটিতেই চুলে পাক ধরে, দাঁত হয়ে যায় নড়বড়ে।
আস্তে আস্তে একটা সময়, প্রবাসীদের কোমল মনটা পাথরে পরিনত হয়, ধিরে ধিরে সয়ে যায় একাকিত্বের কষ্টগুলো। যদিও দেশে থাকা কেউই অতটা ভাবার সময় পায়না, বিদেশে থাকা তার আপনজনকে নিয়ে। কিন্তু প্রবাসে থাকা মানুষটির ভাবনার সবটুকু জুরে শুধু তার পরিবার আর পরিবার।
যদিও প্রবাসের মাটিতেই তার বসবাস, তবু দেশের কোন হাসপাতালের, কোন ডাক্তারের চিকিৎসা ভাল হবে তার বাবার জন্যে, তার সন্তান কোন স্কুলে পড়লে মানুষের মত মানুষ হবে, এমন কি তার স্ত্রীর মোবাইলের ডাটা ব্যালেন্সের মেয়াদ কবে শেষ, সেই হিসেবও রাখে শত ব্যস্ত প্রবাসীটি। অথচ নিজের প্রতি চরম বেখেয়ালি সেই প্রবাসীটি।
দেশের মাটি থেকে টেক'অফ এর ডেটটা নির্ধারিত থাকলেও, দেশের মাটিতে ল্যান্ডিং করার ডেটটা কিন্তু অনিশ্চিতই থাকে সব সময়।
তবুও প্রবাসীরা ভাল আছে, ভাল থাকে এই ভেবে যে, তার পরিবারটা ভাল আছে, সুখে আছে।
#প্রবাসীর_গল্প,
সুমন সিকদার,
সিঙ্গাপুর প্রবাসী।

