বাবা, অবসর দেওয়ার আগেই কেনো চলে গেলে?
আমিতো প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি, আর জীবনের সাথে যুদ্ধ করি। স্বপ্ন দেখি সমস্ত অভাব অনাটন হটিয়ে, পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর, স্বপ্ন দেখি বাবা তোমাকে অবসর দেবার।
যুদ্ধ করি, নিজের সাথে, নিজের সমস্ত ইচ্ছে আর চাওয়াগুলোর বিরোদ্ধে।
নিজের ইচ্ছে গুলোকে হারিয়ে দিয়ে, জিতিয়ে দেয় পরিবারের স্বপ্ন গুলোকে। বাবাকে অবসর দেওয়ার দায়বদ্ধতার কাছে, নিজের সমস্ত অভাব অভিযোগগুলো কাফনে মুড়িয়ে দেই অনায়াসেই। তবুও হলোনা বাবাকে অবসর দেওয়া, মিললোনা আমার কপালে সফলতার সোনার হড়িণ।
চার চারবার, প্রবাসে আসলেও নিয়তির ঘুরপাকে, শুন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে দেশে বারংবার।
লাষ্ট যে বার সিঙ্গাপুর আসলাম, তার কয়েক মাস আগে, বাবা তার বুকের মাঝে অনেক অনেক অভিমান আর কষ্ট লোকিয়ে চিরবিদায় নিয়ে চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে।
ছেলে হিসেবে নিজেকে, পৃথিবীর সব থেকে বড় অপদার্থ মনে হয় এখন। আমার চেষ্টার কোন কমতি ছিলনা, কিন্তু নিয়তি আমার সহায় হলোনা।
আমাকে ক্ষমা করো বাবা, তুমি যেভাবে না খেয়ে, আমার আবদার গুলো পুরন করতে ছোট বেলায়। আমিও ঠিক তেমনি ভাবেই খেটেছি অবিরাম তোমাকে অবসর দিতে। কিন্তু আমি পারিনি, আমি হেরে গেছি বাবা, নিষ্ঠুর নিয়তির কাছে বারংবার, হেরে গেছি।
দেখনা, এবার বহু কষ্টে আসার পরেও, মাত্র কয়েক মাস পরেই করোনার কারনে, কোম্পানি আমাকে আবার দেশে পাঠিয়ে দিল, কি করবো আমি, কি দোষ আমার। এ কেমন নিয়তি আমার।
আমায় ক্ষমা করো বাবা,
এক হতভাগা প্রবাসীর গল্প,
সুমন সিকদার🖊️
সিঙ্গাপুর প্রবাসী।