একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু "
আব্দুল্লাহ জিয়াদ
মানিকগঞ্জের এক নিভৃত পল্লীতে
ছেলেটির বেড়ে ওঠা
প্রবেশিকা পাশের পর চলছিল
তার এদিক ওদিক ছোটা।
দেবেন্দ্র কলেজে ইন্টারমেডিয়েট কমার্সে
অংক কষছিলেন ঘেমে
হেনকালে নিজেকে জড়ালেন
এক লাস্যময়ীর প্রেমে।
তারপর ছেলেটি ঢাকা গেলেন
ডেকেছেন পিতৃ গুরু
জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হয়ে
লেখাপড়া করলেন শুরু।
গ্রাম্য-বালার চিঠি আসে
তার কাছে নিয়মিত
পিতার ব্যবসায় সাহায্য করে
সময় হচ্ছিল অতিবাহিত।
পিতা যখন জানলেন তার
মন নেয়া-দেয়ার কথা
বিয়ের সন্মতি দিয়ে দিলেন
দিনক্ষণ হলো ঠিক যথা।
ভগ্নিপতির সাথে সারলেন তিনি
বিয়ের কেনাকাটা
রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে তখন
উত্তাল শহর ঢাকা।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মিছিলে
ছেলেটি নিয়মিত যেতো
মায়ের ভাষা কেড়ে নিবে হায়েনা
সহ্য নাহি হতো।
২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র ধর্মঘটের
ডাক দেয়া যখন হলো
কুলাঙ্গার নাজিমুদ্দিন ১৪৪ ধারা
জারি করে বসলো।
নিকটজন যত নিষেধ করলো
রফিক যেওনা মিছিলে
দুদিন পর তোমার বিয়ে
অমঙ্গল হতে পারে গেলে।
প্রিয়ার চেয়ে বড় প্রিয়তম
সাধের মাতৃভাষা
তাকে উদ্ধারে যায় যদি প্রাণ
তবু মিটবে আশা।
২১ ফেব্রুয়ারি সকাল বেলা
মিছিল বের হলো
রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই
রফিক ঘোষণা দিলো।
রাইফেলের গুলিতে ঝাঁঝরা হলো
রফিকের গোটা মাথা
মগজ ছিটকে ছড়িয়ে গেল
রাজপথ হলো মাখা।
অ আ ক খ মুক্তি পেল
রফিকদের বিনিময়ে
এসো বাঙ্গালি ঋণ শোধি আজ
কুর্নিশ করি বিষ্ময়ে!!