যে ছেলেটি দু'দিনের বেশি বাড়ি ছেড়ে থাকেনি কখনো, আজ তার ৬ বছর কেটে যাচ্ছে প্রবাসে।
মায়ের হাতের রান্না ছাড়া যার মুখে ভাত উঠতোনা, খেতে পারতোনা, আজ ৬ বছর সে খাচ্ছে ক্যাটারিং এর খাবার। শত দুঃখ আর না পাওয়ার ভিরেও,
বুকে তবু তার বিশাল আনন্দ, কারন তার এ ত্যাগের বিনিময়, পরিবারের সকলের ছোট ছোট ইচ্ছে আর স্বপ্নগুলো পূরন হচ্ছে।
তার রক্ত পানি করে উপার্জিত টাকায় গড়ে দিয়েছে, মায়ের স্বপ্নের পাকা ঘর।
নিজে ভাল কিছু না খেয়ে তিল তিল করে জমানো টাকায়, হয়েছে বোনের বিয়ে।
কোন ঈদেই নিজের জন্যে কিছু না কিনে, কিনে দিয়েছে নতুন জামা পরিবারের সব্বাইকে।
তবু তার মনে কোন আফসোস নেই, নেই দ্বিধা দন্ধও, কারন সে জানে এটাই প্রবাসীর জীবন।
কারন প্রতিটি প্রবাসী মানেই এক একটি মোমেরবাতি, তারা নিজেরা জ্বলে জ্বলে আলোকিত করছে নিজ পরিবার আর দেশকে। নিজের জীবনটা সাদাকালো রেখেই, রঙ্গিন রঙ্গে সাজিয়ে রাখছে সদা আপনজনদের জীবন।
স্বপ্নে সে প্রয়ই বাড়ি ফিরে, সবার সাথে মাতে আড্ডা আর কোলাহলে, ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখে আপন প্রিয় মানুষগুলোকে, কিন্তু বাস্তবে তার বাড়ি ফেরাটা অনিশ্চিত, সে নিজেও জানেনা কবে ঠিক হবে তার আপন নীড়ে ফেরা।
আর এভাবেই কোটি প্রবাসী নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করে, নিজের জীবন যৌবন, স্বাদ আহ্লাদ গুলোকে বিসর্জন দিয়ে গড়ে দিয়ে যাচ্ছে অন্যের জীবন। অভাবের অতল গহ্বর থেকে টেনে তুলে, স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনছে প্রতিটি পরিবারে।
প্রবাসীরা নিজে কেমন আছে, সেটা নিয়ে ভাবেনা একবারের জন্যেও। তাদের ভাবনার সবটা জুরে শুধু পরিবারকে ভাল রাখা, তাদের মুখে হাসি ফুটানো।
আর তাইতো প্রবাসে ১০/১৫ বছর কেটে গেলেও, প্রবাসী ভাইটার ব্যাংক একাউন্ট তখনো শূন্যের ঘরেই থেকে যায়।
ভাল এবং সুস্থ থাকুক প্রতিটি প্রবাসী যুদ্ধা ও তাদের পরিবার।
#প্রবাসীর_গল্প,
সুমন সিকদার,
সিঙ্গাপুর প্রবাসী।

