কিছু কথা............ কত কথা
শাহ সাবরিনা মোয়াজ্জেম
....................................
আমি একটি মাটির প্রদিপের, দুঃখের নিভু নিভু সলতে ।
জ্বলতে জ্বলতে এঁকে বেঁকে চলে,
আলো দিয়ে আমি নিজেই আঁধার ।
আমি একটি আলোহীন সূর্য ।
নির্দোষ হয়ে উত্তাপ হীন ।
বিজলী আর তৈল পাত্রের অগ্নি কলায়
দুনিয়াতে বড় বেমানান ।
আমি একটি মরা শ্মশান ।
পৌরুষ ও পুরোহিতের ভীরে
আমি অসহায় দাঁড়িয়ে দেখি
বৈধব্যের অসহায় রোদন ।
কি করে জ্বলে জ্বলন্ত চিতা ।
আমি একটি শুনশান গোরস্থান ।
গোরের চারিপাশে ইট পাথরের ছোঁয়া ।
ধিকি ধিকি শুনতে পায় শবের কান্নার রোল ।
অসহায় স্বজনের মুখরিত গুনগানের ভোজ্য ।
সতী তলায় এসে থমকে যায়
আধো কি আমি সতী !
আমার অতীত একদিন স্ব মহিমায় দাঁড়াবে
আমার তৈল চিত্রের জটলায় ।
আহাজারি করার কেউ নেই
জীবনটা ই হরিষে বিষাদ !
আমি অশ্বথ বৃক্ষ ।
কত পথিক এলো গেলো
শুন্যতার কবলে কত পথিকের নীরব বিলাপ শুনেছি ।
আমার মর্মরিত কান্নার বিলাপ তারা কি শুনেছে কভু ।
বট বৃক্ষের নিচে বসলে ই পথিক হয়না ।
তার চেয়ে বরং নিম তলায় বসলে, নীরোগ থাকা যাবে ।
কিছু পানসে স্বাধ গড়িয়ে পড়েছে অচেনা আলোয় ।
গর্জে পড়েছে দুঃখী নীল গাঙ্গের ঢেউয়ে ।
নদী থেকে জন্ম নেয়া গাঙ্গের প্রসব বেদনা
শুনেছে কি কেউ, শুনেনি ।
মর্ম ছেড়া বেদনার আর্তনাদে
বিমূর্ত রাতের ঘুম ভাঙ্গে, এ যে শব্দহীন কান্না ।
প্রকৃতির কাছে মিছে সমর্পণ ।
প্রকৃত ভাঙন তাহলে কোথা থেকে আসে ।
সংশয়ে কাঁপে ধরণীকুল ।
ক্রমশ শুন্যের দিকে !
মাঠ ময় ছড়ানো রোদ্দুর ...............
ভেজা আকাশে বরষা..................
মাঘে হাড় কাঁপানো শীত ..................
গ্রীষ্মে কাঠফাটা গরম.....................
আকাশে পক্ষি কুলের ডানা মেলে দেয়া ।
দেখি দ্রত সঞ্চারশীল ক্রমশ ভুমিকম্প ।
নীড়ের উদ্দেশে চলি নিরুদ্দেশ ।
মুয়ুরি পেখম মেললে, আমি হয় খিলাড়ী ।
মনে চেপে বসে ভুল জন্মের ধুলি ।
পিপাসা কাতর আমি, মৃত্যুর দিকে ঝুকে আছি ।
যমদূত কোটি হাত দূরে ।
রক্ত নদীর অগ্নি ঢেউ গুনি ।
আর কটা দিন, আর কটা দিন বাকি ।
গোর আঁকি ঘাসের প্রতীকে, মাটির চিহ্নে ।
যদি ভুল করে এসে যায়, আমার মনের সিন্দুকে
মৃত্যুঞ্জয়ী যমদূত !!!

