ADS

যৌনতা সামাজিক হেনস্থার হাতিয়ার না প্রাকৃতিক!!

যৌনতা সামাজিক হেনস্থার হাতিয়ার না প্রাকৃতিক!!

কুকুর কোন পোশাক পরেনা, তাই তার যৌনতা চরিতার্থ করার একটা মৌসুম আছে। মানুষ যেহেতু কুকুরের চেয়ে উন্নত প্রাণী, সে তার উন্নত মস্তিষ্ক ব্যাবহার করে সারাবছরই যৌনতা চরিতার্থ করে (বিশেষ দ্রষ্টব্য লক্ষনীয়) আর কট খাইলেই পোশাকের ফাঁকফোকর খোঁজে!!

মানুষ পোশাক না পড়লে আসলে শালীন,অশালীন মাথায় পীড়া দিতোনা। কাজেই কুকুরের মতো একটা মৌসুম থাকতো। বা আদি বস্ত্রবিহীন যুগের মতো চলতো। সম্মতিসূচক যৌনাচার গড়ে উঠতো অন্ততপক্ষে যৌনাচারের ফলে বাচ্চাকাচ্চা জন্মাইলে সমাজের অন্যদের সাথেই তারা বেড়ে উঠতো। মানব প্রজাতির একাংশ "স্ত্রী জাতি" ধর্ষণ বিষয়ক ট্রমা এবং ভীতির মধ্য দিয়ে যাইতোনা। সামাজিক হেনস্থার শিকার হইতো না।

আলোচনায় আসা ঘটনাগুলো বিচার কইরা দেখেন, অনেকগুলা ঘটনায় ধর্ষণ মূলত যৌনতা হিসেবে আসে নাই। আসছে সামাজিকভাবে হেনস্থা করার জন্য। এই হেনস্থার বোধ,ভীতি বা ধ্যান ধ্যারনা সুন্দর করে মেয়েদের মগজে ঢুকায় দেয়া। ছেলেদের মগজেও থাকলে একই ঘটনার অংশীদারী হিসেবে পরেরদিন সে নিজের মুখ দেখাইতো না আর কাউরে।

মাস্টার কি আর নষ্ট তালা-র কনসেপ্ট এই সমাজের। কাজেই গড়ে ওঠা সমাজব্যবস্থা দায়ী আজকের দিনের জন্য। বাংলাদেশের মতো দেশে যারা "অশালীন পোশাক" নিয়া সাত ইঞ্চি লম্বা লেখা পোস্টান, তাগো জিগাইবার মন চায়,এই দেশে আপনেরা এতো অশালীন পোশাক কই দেহেন? সবাই কি ঢাকার নাইট ক্লাবে গিয়া বইসা থাকেন?

জনৈক ফ্যামাস সেলিব্রিটি আবার মেয়েগো টি -শার্ট পরন লইয়া কথা তুলছে (পরে তোপের মুখে যদিও স্টেটমেন্ট পাল্টাইছে)। ভাইজান, আপনের টি-শার্ট এর উপর "উন্নত সুডৌল বক্ষযুগল" (সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেরাচ্ছে এই ছবি) দেইখা মাইয়া প্রজাতির লোল পড়া আরম্ভ করলে...? (ওহ স্যরি! যৌন উত্তেজনা তো আবার মাইয়া গো জিনিস না! খালি বিয়ার পর উত্তেজনায় কমতি দেখলে ভিপিএন আর ফার্মেসি মারান!)...এইভাবে আপনাগো কথাকাজ চলতে থাকলে মাইয়ারা লোল সামলাইতে পারলেও একদিন দেখবেন "গে" চিন্তাধারীদের হাতে "র‍্যাপ" হয়ে গেছেন!

আরেকদল কইতাছেন, "ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব আজকের জন্য দায়ী!" খাড়ান! কোন ধর্মের মূল্যবোধেই একচোখা হইয়া নারীগো সাবধান করেনাই। পুরুষ প্রজাতিরেও সাবধান হইতে বলছে।

কবি লেখকদের এক অংশও এই ধর্ষণ ট্রেন্ডে লেখা লিখতে ছাড়েন নাই। গতকাইল যারা যৌনতারে "শিল্প" বানাইয়া মাখনের মতো ঢাইলা দিয়া পানু কবিতা লিখছেন,রাইত পোহাইতেই তাগো কলমে ধর্মের কথা আইসা পড়ছে। সকাল দশটার আগেই তারা জামাকাপড় এমন কইরা দেখা আরম্ভ করছেন...মাইয়ারাও দর্জির কাছ থেকে জামা আনার পর আয়নায় সামনে অতো নিখুতভাবে ফিটিং টেস্ট করেনা!! নিজের মেকাপ মারা- মুখোশ পরা চেহারা দেইখা নিজেরা লজ্জা পান না? আগে ঠিক করেন, যৌনতা শিল্প/প্রাকৃতিক নাকি পাপ?

"কসমিক সেক্স" নামে একটা মুভি দেখছিলাম। ওইখানে যৌনতার উপর নিয়ন্ত্রণ আনার একটা ব্যাপার খোলামেলা দেখাইছে। গত কিছুদিন পারিপার্শ্বিক অবলোকন কইরা আমার মনে হইতেছে, এই নিয়ন্ত্রণটাই আসল ঔষধ। অথচ এই ঔষধটা আমাদের মধ্যেই আছে। অন্যভাবে। সমাজ ব্যবস্থা তৈরি, ধর্মব্যবস্থা তৈরি, জ্ঞান এবং সংস্কৃতি চর্চা, অধিকার এবং আইন প্রনয়ণ এবং মানুষ যে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী - এই ধারণায় সবাইরে বিশ্বাসী করে তোলা - এইসব নানাবিধ জিনিস নিয়া আমরা সেই "যৌনতা নিয়ন্ত্রণ" ঔষধ বানানোর চেষ্টা করছি।

পুরাপুরি এখনো লাভ হয়নাই। আশাকরি হবে একদিন।

যৌনতা পাপ না শিল্প - সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে। যৌনতা সামাজিক হেনস্থার হাতিয়ার না প্রাকৃতিক এবং প্রয়োজনীয় বিনোদন সেইটা বুঝবে মানুষ একদিন।

সাথে আরো একটা প্রশ্ন -

এই ধর্ম অধ্যুষিত দেশে যেখানে আইন এবং বিচার ব্যবস্থা আছে,সেখানে জবরদস্তিমূলক যৌনতা দমন করা উচিত? নাকি টি-শার্ট পরার ইচ্ছা?

নিজেরে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখেন এমনভাবে- যেন শার্ট কামিজের উপর ওড়না থাকা না থাকা তো পরের ব্যাপার পুরো যৌনাঙ্গ উন্মুক্ত করে রাখলেও আপনি নিজেরে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। কমপক্ষে ঝাঁপায় না পড়ে বাথরুমে দৌড়াতে পারেন। তারপর কাপড়ের শালীনতা নিয়া আহাজারি কইরেন...

আমি জানি,আমার এইসব কথায় কারো ধ্যান ধারণা বদলানোর ঠ্যাকা পড়েনাই। তবু পইড়া ভাবেন। নারী বলতে নিজের রক্তের সম্পর্কগুলোর সামনে নিজেরে দাঁড় করায়া ভাবেন।

হুদাহুদি, এই পোশাক ধইরা টান মাইরেন না। মেয়েরা পালটা টান দেয়া আরম্ভ করলে নিজেরা লজ্জা লুকাইবেন কই। (অবশ্য তার দেড়ি আছে!) আর একশ্রেণির পুরুষঘেষা স্ত্রী জাতি আছেন। পুরুষেরা যা কয়,তাই ঠিক মনে হয়!! তালে তাল মিলান!

 আপা,আপনাগো কাছে জিগাই আমারো যদি পুরুষগো ঠিক মনে হয় তাইলে তাগো জীবন উরাধুরা মনে হইলে, তাগো মতো স্বাধীনতার টেস্ট আমি নিতে চাইলে, তাগো মতো পোশাক পরলে চাইলে - আমার দোষটা কোথায়? তারাই সবসময় ঠিক, তারা আইডল, তাগো মতোই তো হওয়া উচিত!

কি....এই ঝগড়াটা এখন নারী - পুরুষ গ্রুপিং কইরা ফালাইছে না???

কাজেই ওয়ান সলিউশন, মানুষের মতো বাঁচতে শেখেন দুইদলই। আর এতোগুলো উপাদান দিয়ে তৈরি "যৌনতা নিয়ন্ত্রণ" ঔষধের সবটুকই খান। কোনটা বাদ দিয়েন না। মানুষের মতো না পারলে নিদেনপক্ষে কুকুরের মতো জীবন কাটান! মৌসুমি জীবন কাটান! সেই মৌসুমে সরকার ব্রোথেলগুলোতে ফ্রি সার্ভিসের ভর্তুকি দেবে...

ভাই এবং বেহেনরা, যৌনতা সবার মধ্যেই আছে। বয়ঃসন্ধিকাল থেকে ছেলে মেয়ে উভয়ের মধ্যেই প্রাকৃতিকভাবে এটা তৈরি হয়। যৌনতার কমতি থাকাই বরং মানুষরে "আনফিট" করে। কাজেই এইটা অবাধে চরিতার্থ করে কেউ মাস্টার কি-ও হয় না, নষ্ট তালাও হয়না। এইসব ফালতু সুপিরিয়রটি- ইনফিরিওরিটি বাদ দেন। প্রকৃতপক্ষে, সামাজিক হন। অসম্মতিসূচক,অবাধ এবং জবরদস্তিমূলক যৌনাচার চর্চা কইরেন না। ভদ্র সামাজিক লেবাশে কেউ কুলাঙ্গার মস্তিষ্ক বহন কইরেন না।

বি.দ্রঃ লিস্টের চিন্তাশীল,বুদ্ধিমান,প্রগতিশীল, শিক্ষিত সত্যিকারের "মানুষ" দের জন্য এই লেখা না। এইলেখায় আপনাদের মানসিক নিপীড়ন হবার কথা না। তবুও যদি কারো হয় বিন্দুমাত্র...ক্ষমা চাই...তবে...একটু খুঁজে বের করবেন -

আপনার মানসিক নিপীড়ন কেন হইতেছে?

ফাল্গুনী আলম

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.